SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - বাংলা - সাহিত্যপাঠ | NCTB BOOK

আলোচ্য গল্পটি শওকত আলীর ‘লেলিহান সাধ' (১৯৭৭) গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে। কপিলদাস মুর্মু এক বৃদ্ধ সাঁওতাল । ভূমির অধিকার নিয়ে সাঁওতালদের রয়েছে রক্তে রঞ্জিত গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য। ভূমি তাদের অস্তিত্বেরই অপর নাম । তাই নিজেদের বসতবাটি থেকে উন্মূলিত হবার আশঙ্কা যখন তীব্রতর রূপ ধারণ করে । তখন বয়সের ভারে ঝিমিয়ে পড়া, অন্য সবার কাছে নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় মানুষ কপিলদাস অমিত সাহসে উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। জীবনের শেষ কাজ হিসেবে শেষ লড়াইটা লড়বার জন্য নিজেকে সে সময়ের হাতে তুলে দেয়। তরুণদের ভয় দ্বিধাকে অমূলক প্রমাণিত করে একাই সে আত্মত্যাগী সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাটির কাছাকাছি থাকা এক প্রবীণের এই অনিঃশেষ সংগ্রামশীলতার নান্দনিক রূপায়ণ ঘটেছে এই গল্পে । সমগ্ৰ গল্পজুড়েই লেখক স্থবির দশায় আক্রান্ত কপিলদাসের অতীতের স্মৃতিকথা, বীরত্বগাথা- যার কতকটা সত্য কতকটা কল্পনা— এসব প্রসঙ্গ নিয়ে আসেন। আর সেইসঙ্গে কপিলদাসের প্রতি অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরেন; যার মূল সুর হলো : ‘হা মড়ল তুই বুঢ়া মানুষ— তুই কিছু করিবা পারিস না।' এরূপ চিন্তার বিপ্রতীপে অবস্থিত কেবল শিশুরা। তাদের কাছে কপিলদাস এবং তার গল্প— দুয়েরই বিশেষ আকর্ষণ ও গুরুত্ব রয়েছে। এই উৎসাহ কপিলদাসকে নতুন চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। সে তার বয়সকে অতিক্রম করে যায়; অনেকটা খেলার ছলেই জড়বৎ কপিলদাস আকস্মিকভাবে গতিপ্রাপ্ত হয়। তার হাতে উঠে আসে তির-ধনুক। একের পর এক তির তার হাত থেকে ছুটে যেতে থাকে শত্রুকে লক্ষ করে। কপিলদাস নিজে কেবল একটি চরিত্র থাকে না; হয়ে ওঠে জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামের এক আপসহীন যোদ্ধা। কপিলদাসের আশ্রয়ে লেখক আমাদের জানিয়ে যান লড়াইয়ের কোনো বয়স নেই। উন্মূলিতপ্রায় মানুষগুলো কোনো কিছুর পরোয়া না করেই তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এই আশাবাদের দ্যোতনা জাগিয়ে গল্পকার রচনাটি সমাপ্ত করেন। সাঁওতালি কথনভঙ্গি, শব্দ যোজনা এবং যথোপযুক্ত প্রেক্ষাপট সৃজন এই রচনার শিল্পসাফল্যকে বহুগুণ বর্ধিত করেছে।

Content added By

Promotion

Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.